সত্যি বলতে কি লোকে ডায়েরীতে কি লেখে, কেন লেখে, কীভাবে লেখে, সেসব নিয়ে আমার খুব একটা ধারণা নেই। তা আপনি যদি ভাবেন, এই লেখাগুলো মলাট বাঁধানো পাতায় পাতায় তারিখ দাগানো কোনও সত্যি ডায়েরী থেকে তুলে দেওয়া, ভয় হয় আপনি হতাশ হবেন।
ডায়েরী বরং আমার কাছে একটা টাইম লাইন। একজনের জীবনের বিভিন্ন দিক নিয়ে তার চিন্তা কীভাবে বদলে বদলে যাচ্ছে সেই সবেরই একটা খতিয়ান। পরে সেটার পাতা উল্টিয়ে ফিরে ফিরে দেখা যেতে পারে নিজের ইতিহাস। তাতে নিজের বদলটা সুন্দর ধরা পড়ে, এবং পুরানো ভাবনা বা ঘটনাগুলোকে নতুন করে ব্যাখ্যা করার বা মানে খোঁজার সুযোগ পাওয়া যায়।
তো এখানে সেই সব ছোট ছোট নোট, আত্মজিজ্ঞাসা বা কথোপকথন উল্লেখ করলাম, যেগুলো মনের মধ্যে বেশ খানিকটা আচমকাই আসে বলা যায়। স্বভাবতই, এগুলো বড্ড বেশি সাব্জেক্টিভ এবং সাময়িক। সাময়িক এই কারণে বললাম, কারণ এইসব ভাবনাগুলোর অনেক কিছু আজকের পরিবর্তিত ‘আমি’-র ধোপে টেকে না।
সেই সবই রইলো নিচে।
মুভি কি সত্যিই সমাজের দর্পণ?
এই যে globalisation এর ফলে আমাদের সমাজে ওয়েস্টার্ন কালচার এর বাজে জিনিস গুলো ঢুকে পড়ছে সেটা আমার মোটেও… সবে একটা গুরু গম্ভীর philosophy উগড়াতে শুরু করেছি, নৈঋত দা থামিয়ে দিয়ে বললো, আচ্ছা এই যে ওয়েস্টার্ন কালচার নিয়ে চেঁচামেচি করিস; ঠিক জানিস সেটা কেমন? ওখানে সব বাবা মা বছরে গড়ে আড়াই বার ডিভোর্স করে, আর বাচ্চা দের প্রতি কোনও ডিউটি নেই? মেয়েরা সবাই রাস্তা ঘাট কে fashion show এর ramp ভেবে বসে আছে, স্কুল এর ছেলে মেয়েরা assignment নয় শুধু ব্যাচেলর পার্টি করে? জানিস USA তেও alcohol কিনতে গেলে minimum age হতে হয় 21? Average age of loosing virginity is 17.…
বাংলা ভাষার ভবিষ্যৎ
রাজীব দা এসে বললে, সুমন, আজকাল তো বেশ দারুন লেখালেখি করছ ফেসবুকে। তবে ইংলিশ ওয়ার্ড একটু কম ইউজ কর। সুমনের সঙ্গে আমি তখন একটা পেপার নিয়ে সিরিয়াস ডিসকাশান করছি। ও আরও সিরিয়াস হয়ে রাজীব দার পকেট থেকে খপ করে পেন টা নিয়ে পেপারের উল্টো দিকের ব্লাঙ্ক পেজে কীসব খস খস করে লিখল।তারপরে বললো, রবীন্দ্রনাথ এসে সাধু বাংলা ছেড়ে চলিত ভাষায় লেখা পপুলারাইজ করলেন। তুমি বলছ আরেকজন রবীন্দ্রনাথ না আসা অবধি আমরা খাঁটি বিশুধ ভাষাতেই শুধু লেখা লেখি করব? রাজীব দা ভালো মানুষ। কালচারাল ঐতিহ্য নিয়ে কিছু বলবে বলবে করছে। আমার আবার এদিকে ইন্টেলেকচুয়াল তর্ক শুনতে অ্যালারজি।থামিয়ে বললুম, হুম, ওর লেখা…
আমাদের চিন্তা ভাবনা কতটা আমাদের নিজস্ব?
আনন্দ আমাদের ল্যাবে বেশ কাজের ছেলে। এত কাজের ফাঁকেও রোজ রাতে এক ঘণ্টা ফেসবুক করে। তাই দেশ আর দশের সব কিছুই ওর নখের ডগায়। আমার ছোট মাথায় কিছুই বিচার আসে না। ও-ই ভরসা।এদিকে ফেসবুক এ একটা বেশ রাজনীতি সচেতন গুরু গম্ভীর পোস্ট না দিলেই নয়। তাই ধরলুম তাকে।ভাই, মোদী তো এলো। এবার দেশ টা তাহলে গোল্লায় যাবে, কনফার্ম ? কি বল?”আমার কি মনে হয় জানিস?” দিয়ে একটা লম্বা বক্তৃতা দেবে ভেবে প্রস্তুত হচ্ছি, দেখি ব্যাটা পুরো ব্ল্যাঙ্ক!বলে, “দেখ ভাই, আমি যেটা আমার ভাবনা ভাবতুম, realise করলুম, সবই ধার করা। এই এ ও সে যা যা বলে সেগুলোই পেটের ভেতর গিয়ে তাল…
কতটা পথ পেরোলে বল মন্ত্রি হওয়া যায়?
ক্যান্টিনে একটা chicken rice order করে বসেছি, দেখি ইন্দ্রনীল একা একা বসে হাসছে! কাছে গিয়ে খোঁচালুম, কি রে, একলা বসে ক্যাবলার মত হাসিস কেন?- এই ভাবছিলাম, এই যে এরা মন্ত্রী প্রধান মন্ত্রী হচ্ছে, Basically এদের যোগ্যতা টা কি? না এরা হেব্বি বক্তৃতা করে। জনমোহিনী, পাবলিক খায়। তো ধর, কাল রহিমকে ফ্লাইট চালাতে দিলাম, ও বেশ গুছিয়ে কথা বলে। কিংবা সুরজিৎ কায়দার বাতেলা মারে। বলা হল, ভাই, মহাকাশ গবেষণার ব্যাপারটা তুই ই দেখ। কিংবা সুপ্রিয় কথার ছলে দিব্যি মেয়ে পটায়। ওকে বলা হল, মা’র অপারেশন টা তুই ই কর… কেমন হবে? জানতাম ইন্দ্রনীল কথা কম বলে, ভাবে বেশি।তাই বলে এত আজগুবি…
যোগ আর বিজেপি
প্রশান্ত বলছিল, দেখ ভাই, এই যে আজকাল যোগ নিয়ে এত্ত সব এটা ওটা হচ্ছে. আমার তো দোষের মনে হয় না. এটা তো world কে দেওয়া আমাদের কালচার এর একটা বেশ ভালো জিনিস. তো সেটা যদি একটু প্রমোট করে, খারাপ কি. ওকে কখনও বিজেপির বড় supporter আমার মনে হয় নি. আমি তখন kurkure খেতে খেতে ফুরফুরে মেজাজে ছিলাম. মনে ধরলো কথাটা.
The pseudo secularism
অপূর্ব কয়দিন হল আমেরিকা থেকে ফিরেছে. ওখানকার খাবারের কবলে পড়ে অবস্থা খানিক কাহিল মনে হলো. বললো ওখানকার main খাদ্য নাকি chicken, pork আর beef. সব পাশাপাশি রাখা. আমি ওকে গোঁড়া হিন্দু বলেই জানি. শুনে automatic বলে উঠলুম, বলিস কি, খেলি কি তবে? বললো, beef টা একটু এড়িয়েই গেলুম। ওই আধ সেদ্ধ chicken দিয়েই প্রাণ রাখা। অনেক দিনের সংস্কার, beef এর কথা ভাবলে গা টা কেমন ঘিন ঘিন করে। তবে কি জানিস, ওটাও একটা প্রাণী, মুরগী যেমন। যারা খায় দোষ দিতে পারি না. খোঁটা না দিয়ে পারলাম না, তাহলে যে সেদিন অনির্বাণ beef খেয়েছে বলে heavy গাল দিলি! ও বললো, দেখ, ভেতরে…