হে হে। একটা ওয়েবসাইট বানিয়েই ফেললুম। আদতে বানিয়েছিলাম অনেক কাল আগে– সেইইইইই যখন পড়তাম বি এস সি সেকেন্ড ইয়ারে (মানে ২০১৪ সাল)। আমার বড় মামার ছোট ভাগ্নে, কিংবা আমার মেজো কাকার একমাত্র ভাইপো, অথবা আমার ঠাকুরদার একমাদ্বিতিয়ম নাতি ছাড়া সেটার খবর কেউই বিশেষ জানত না। তো লক ডাউনের সুযোগে সেই ওয়েবসাইটে আরও দু চারটে চারা গাছ পুঁতে এখানে বিজ্ঞাপন দিতে এসেছি। এ বিষয়ে কাররই কোনও সন্দেহ নাই যে সে গাছ গুলোতে জল পড়বেও না। এবং অচিরেই সব শুকিয়ে মরবে। তাও যারা আমাকে একটু আধটু চেনেন, একবার ঢুঁ মেরে দেখতে পারেন এখানকার অলিগলি।
বিজ্ঞাপন দেওয়া হয়ে গেছে। তবু শেষ করার আগে আরও একটু একটু জবানবন্দী। আমার পিশে মশাইয়ের বেজায় শখ ছিল স্ট্যাম্প কালেক্ট করার। আমার ছোট মামার ছেলেবেলায় কি জানি কেন রাশি রাশি পুরানো লটারির বাণ্ডিল জমা করতো। তো এইরকমই আজকালকার যুগে একটা হবি তো হতেই পারে ছাই পাঁশ কিছু একটা লেখা। আর তার সঙ্গে কয়েকটা চমৎকার ছবি জুড়ে দিয়ে একটা ব্লগ বা ওয়েবসাইটের তাকে তাকে সাজিয়ে রখা। সেখানে আদৌ কেউ কখনও উঁকি মারবে কিনা সেসব ভেবে দেখার কোনও যথার্থতা নেই। হবি তো এরকম হতেই পারে? ঠিক কি না?
তাও আপনি যদি পুলিশের মত জেরা করে হঠাত এই শখের কারণ জিজ্ঞেস করেন, আপনার জন্যে রইল দুটো পয়েন্ট।
প্রথমত, আজি হতে ত্রিশ বৎসর পরে বিবেক যদি জিজ্ঞেস করে, সেইবার সেই করোনা মহামারির সময় ৯০ দিন ১২ ঘণ্টা ঘরে বসে বসে কি করেছো? তার জন্যে একটা উত্তর তৈরি থাকুক।
এবার দ্বিতীয় কারণ। আমার হেব্বি বিশ্বাস সেদিন ঘনিয়ে আসছে যেদিন নিজের নামে কৈশোর বয়সের বানানো একটা ইউটিউব চ্যানেল কিংবা নিদেনপক্ষে একটা ব্লগ না থাকলে বুড়ো বয়সে নাতি নাতনি খোঁচা দেবে, দাদু যখন জন্মেছিলে, তখনও বুঝি একটা দুটো ডাইনোসর চড়ে বেড়াত? বন্ধুবর সুমনকে জিজ্ঞেস করতে বলল, দেখ আজকাল লোকে বই পড়ে না। কবছর পড়ে এইসব ব্লগ ফ্লগও পুরানো দিনের চিঠির মত হয়ে যাবে। কিছু করলে সেটা হওয়া উচিৎ ভিডিও মাধ্যমে। তারপর আমার দিকে খানিক ক্ষণ চেয়ে থেকে বলল, তোর এই রকম একটা ভ্যাদা মার্কা পারসোনালিটি নিয়ে, টাক পড়া চুল আর গ্যাদ্গ্যাদে কণ্ঠে ভ্লোগ হবে না। তুই বরং …
মোদ্দা কথা, যুগের হাওয়ায় একটু গা ভাসানো হচ্ছে আর কি। বিজ্ঞাপন টা বড় হয়ে গেলো। এবার কাটি!
পুনশ্চঃ ভেবে ভেবে আরেকটা তৃতীয় কারণ বার করেছি! এখন কার যুগে কেউ ডায়েরি তেমন লেখেন টেখেন না। কিন্তু জুকারবারগের ভোল্টে মানে ফেসবুকে আমরা মাঝে সাঝে যেসব বমি করে রাখি, অনেক দিন পরে সেগুলো পড়লে একটা নস্টালজিক ফিলিংস হয়। হয় কিনা? বেশ মনে হয়, আহা ভারি বাচ্চা ছিলুম তো তখন – এইসব বিদঘুটে চিন্তা ভাবনা মাথায় ঘোরাঘুরি করতো! এবার হঠাত ধরুন জুকারবারগ মশাই বললেন, না, কাল থেকে সব ডিলিট। তো সেই লেখা টেখা গুলো আরেকটা জায়গায় ছেড়ে রাখলে সেই ভয় থাকে না। তো সেগুলোই নিজের মত করে একটা নিরিবিলি জায়গায় চড়ে বেড়াক। মাঝে মাঝে আপানদের কারোর ব্যারাম হয়ে শয্যাশায়ী হলে নাহয় উঁকি দিতে আসবেন আমার ব্যারাম হয়ে শয্যাশায়ী হলে না হয় উঁকি দিতে আসব।
পুনশ্চঃ যদি আরও কিছু প্রশ্ন থাকে তবে FAQ পেজে যান। আর নিতান্তই যদি আপনার জানার কৌতূহল থাকে যে মালটা কে, তবে about me পেজটা দেখতে পারেন।