মুহুর্মুহু বাজছে সাইরেন! কান পাতলেই শুধু ভারী বুটের ধপাধপ। রাস্তায় কেবল সেনা, আধা সেনা, পুলিশ, সাঁজোয়া গাড়ি! মাথার ওপর দিয়ে পাক খেয়ে যাচ্ছে যুদ্ধ বিমান! আর টিভি খুললেই “যুদ্ধকালীন তৎপরতার” ছবি! এখানে ওখানে, বনে বাদাড়ে, পাহাড় কেটে, নদীর বুক ফুঁড়ে তৈরি হচ্ছে রাস্তা, ব্রিজ, ব্যারাক। পজিশন নিচ্ছে সেনা বাহিনী। আর মাঝে মাঝেই টাক মাথা, সাদা দাড়ি, হাওয়াই চপ্পল, ক্লিন শেভিত সব মুখ পালা পালা করে এসে বলে যাচ্ছে, হিন্দুস্তান খতরে মে। আগুনে বক্তৃতায় দলে দলে যুব দল জানাচ্ছে তারাও তৈরি সীমানায় যেতে। দেশরক্ষায় আত্ম বলিদান। সবাই তৈরি!
ভাত ঘুম যখন ভাঙল, বুঝলাম – দুঃস্বপ্ন।
তবে রেহাই নেই, ঘুমের দুঃস্বপ্ন ছেড়ে সত্যি দুঃস্বপ্নে ফিরলাম।এখানেও যুদ্ধ চলছে বটে। তবে বর্ডারে না, ভাইরাসের সঙ্গে। দশ, বিশ, পঞ্চাশ না – মানুষ মরছে হাজারে হাজারে!
কিন্তু না, এখানে নেই “যুদ্ধকালীন তৎপরতার”। আম্বুলান্সের বাঁশি বাজছে না। তৈরি হচ্ছে না নতুন নতুন হাসপাতাল, রাতারাতি বসছে না অক্সিজেন প্ল্যান্ট, গড়ে উঠছে না ভ্যাক্সিন প্রোডাকশান সেন্টার। যে কটা হাসপাতাল ধুঁকছে – ডাক্তার, নার্স, স্বাস্থ্য কর্মীর অভাব। যুবকদল আইপিএল দেখছে। টাক মাথা, সাদা দাড়ি, হাওয়াই চপ্পল, ক্লিন শেভিত সব মুখ টিভিতে দেখা যাচ্ছে বটে। তবে ভোট ভিক্ষার পাত্র নিয়ে, গদির টিকিট চাইতে!
কী আর করা যাবে। এ পোড়া দেশে নেতা নির্বাচন হয় সিয়াচেনে যুদ্ধ করবে বলে। অজানা ভ্যাক্সিন সিলেবাসেই নেই!
আগের দুঃস্বপ্নটা ভেঙেছিল মার ঠেলা খেয়ে। এবারেরটা ভাঙাবার জন্যে যমদূত অপেক্ষায়। ততদিন ঘুমাই!