পিঁপড়ে, এলিয়েন (আর করোনা)

আমাদের দেশের বাড়ি যেখানে আমার ছেলেবেলা কেটেছে, ভিটের কোণে একটা বেশ বড় সড় কলোনি ছিল পিঁপড়েদের। তখন মাঝে সাঝে খানিকক্ষণ চুপচাপ বসে থাকতাম ওইটার দিকে তাকিয়ে। আজ হঠাত করে খেয়াল পড়তে টুক করে একবার দেখে এলাম। ঠিক ওই জায়গাটা দিয়েই একটা ইটের দেওয়াল উঠে গেছে এখন। আর একটা গোয়াল ঘরের চালা হয়েছে।

প্রথমটা মনটা খানিক খারাপ মত হল। তারপর দেওয়ালের পিছনে গিয়ে চোখে পড়লো – না, ওরা এখনও আছে। তবে কলোনিটা বেশ ছোট হয়ে এসেছে আকারে। হিসেব কষে দেখলাম বৃষ্টি হলেই চালার জল ওখানে পড়ে নির্ঘাত বন্যা লাগিয়ে দেয় ওদের দেশে।

তার পরে অনেক কিছু ভাবনা এলো মাথায়। আচ্ছা, এই যে দেওয়ালটা ওঠার পরে ওরা ওদের মত করে নিজের জীবন বদলে নিয়েছে, ওরা কি এ সবের মানে বোঝে? ওরা কি জানে আরেকটু কাছেই যে ইয়া লম্বা খুঁটি বসেছে, ওটা দিয়ে মানুষ বলে একটা প্রজাতির লোকেদের বিদ্যুৎ যায়, তারা আলো জ্বালায়, কম্পিউটার চলে, ফেসবুক করে। অবশ্যই এত কিছু বোঝে না ওরা। কেবল এটুকু জানে যে জগত টা বদলে যাচ্ছে, আর ওরা খাপ খাইয়ে নেবার চেষ্টা করছে।

তখনই হঠাৎ শিরদাঁড়া দিয়ে একটা শিহরণ খেলে গেলো। এই যে চারপাশে জাগতিক মহা জাগতিক কত কিছু ঘটে যাচ্ছে, আর আমরা প্রকৃতির খেলা বলে ধরে নিই, সেগুলো কি তাহলে আমাদের থেকে অনেক বেশি সুপার ইন্টেলিজেন্ট কোনও স্পেসিসের দৈনন্দিন জীবনের কান্ড কারখানা। তাদের কাছে আমরা এতটাই পিঁপড়ে যে এগুলোর মানেই বুঝি না! হয়তো ওই অনেকটা উঁচুতে, আমাদের গ্যালাক্সিরও বেশ খানিকটা বাইরে দিয়ে ওদের ওভারব্রিজটা চলে গেছে। আমাদের পৃথিবী ওই মস্ত ব্রিজটার নিচে ছোট্ট একটা কোণায় একটা পিঁপড়ে কলোনি মাত্র!

যাই স্নান করে আসি। এইসব লক ডাউন এফেক্ট মনে হচ্ছে। 🤦‍♂️🤦‍♂️

Leave a Reply

Scroll to Top